খুলনার ডুমুরিয়ায় সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত ফসলের মাঠ। দিগন্ত জোড়া হলুদের সমারোহ। আর হলুদের এ সমারোহে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।
এ বছর উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের টিপনা, রঘুনাথপুর ইউনিয়নের বিল ডাকাতিয়া ও আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া ও চুকনগর মাঠে সরিষা চাষ করা হয়েছে। আর এসব এলাকা ঘুরে দেখে গেছে এমন দৃশ্য।
কৃষকরা জানান, সরিষা খুবই লাভজনক একটা চাষ। অতি অল্প সময়ে ও অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হয়। তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
আব্দুল হালিম নামে এক কৃষক জানান, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘা জমিতে দেড় হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। সরিষার ফুলে খেত ভরে গেছে। ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি পাঁচ থেকে ছয় মণ সরিষা পাওয়া যাবে।
ইউনিয়নের বিল ডাকাতিয়া এলাকার কৃষক আফসার আলী জানান, আমন ধান কাটার পর প্রায় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। আশা করছেন ফলন বেশ ভালো হবে। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: হলুদে ছেয়ে গেছে মাঠ, সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক
টিপনা গ্রামের কৃষক পরিতোষ রাহা বলেন, সরিষা আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি। এক থেকে দুই বার সেচ দিলেই চলে। বাজার দর ভালো হলে এক মণ সরিষা ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি চাষ হয়েছে। দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা হয়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
এক সময় কৃষকরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখলেও সময়ের ব্যবধানে এ চিত্র পাল্টে গেছে। বর্তমানে আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, সরিষা মূলত একটি মসলা জাতীয় ফসল। স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষক যেন অধিক ফলন পায় সে জন্য নানাভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করছি প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না ঘটলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় সরিষার বাম্পার ফলন